বিশাল কেওড়া বনের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা পথ। ভোরের স্নিগ্ধ আলো আর পাখির কিচিরমিচিরে যখন চারপাশ জেগে ওঠে, তখনই অনেক সময় দেখা মেলে এক অনন্য দৃশ্য হরিণের লড়াই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার নীলাভূমি নোয়াখালী হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপে দেখা যায় এমন দৃশ্যের।
চিত্রা হরিণদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার এবং সঙ্গিনীর মন জয় করতে পুরুষ হরিণদের মাঝে ঘটে এমন লড়াই।প্রতিযোগিতার এ দৃশ্য প্রজনন মৌসুমে প্রকৃতির নিয়মে ঘটে থাকে। দুটো হরিণ সামনের পা গুঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে, শিং দিয়ে একে অপরকে ধাক্কা দিচ্ছে, শিং গেঁথে চলছে ঠেলাঠেলি। কখনো কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে এই লড়াই। দর্শনার্থী এবং স্থানীয়দের কাছে এ যেন এক প্রাকৃতিক নাট্য মঞ্চ।
এ দৃশ্য শুধু রোমাঞ্চকরই নয়, বরং জীববৈচিত্র্যের একটা জীবন্ত চিত্র। এটি নিঝুমদ্বীপের অপরুপ সৌন্দর্যের একটি অংশ। যেখানে প্রকৃতি নিজেই রচনা করে গল্প, জীবন বিস্তারের খেলা আর টিকে থাকার সংগ্রাম। সাধারণ মানুষের সাথে হরিণের বন্ধুত্ব শুধু এই দ্বীপেয় দেখা যায়।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মানুষের অনুপ্রবেশ, বন উজাড় ও চোরা শিকারের ফলে হরিণদের নিরাপদ আশ্রয় সংকুচিত হয়ে আসছে। ফলে এই ধরনের স্বাভাবিক আচরণও আজ বিরল হতে চলেছে।
নিঝুমদ্বীপে হরিণের লড়াই শুধু একটি দৃশ্য নয়। এ যেন জীববৈচিত্র্য রক্ষার গুরুত্বের প্রতীক। আমরা যদি আজই সতর্ক না হই, হয়তো আগামী প্রজন্মের কেউ আর এই চিত্র চোখে দেখবে না।